সাতমাইল বাজারের সবজির হাট থেকে কাঁচা সবজি যায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের একাধিক স্থানে। বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক হাটবারে গিয়ে দেখা যায় বাজারে ছিল প্রচুর সবজি। পটলের মৌসুম হওয়ায় এর পরিমাণই ছিল বেশি। আমদানি ছিল অন্য হাটবারের চেয়ে অধিক। সাথে অন্য সবজিও ছিল। তবে দাম নিয়ে অসন্তোষ ছিলেন বিক্রেতারা।
তারা জানান, যে দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাতে করে লোকসানের শিকার হবেন তারা। হাটে প্রতি কেজি পটল ২৫ থেকে ২৮, মুলা ১৮, উচ্ছে ৩০, বেগুন ৮, ঢেরস ১০, শিম ১৫ এবং লাউ প্রতিটি ১০ থেকে ১২ ও বাঁধাকপি ৬ টাকা করে বিক্রি হচ্ছিল।
সদর উপজেলার নাটুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘এ সময়ে সাধারণত পটল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। এর কম হলে চাষের খরচ ওঠে না।’
বড় হৈবতপুর গ্রামের শুকুর আলী বলেন, ‘বাধাঁকপি বেচতে হলো প্রতিটা ৬ টাকায়। এতে তো সার ও কীটনাশকের খরচই উঠবে না।’
অপরদিকে, ব্যাপারিরা বলছেন যে তারা হাট থেকে সবজি নিয়ে ঢাকাসহ বাইরের জেলাগুলোতে দাম পাচ্ছেন না। খুচরা বাজারে ক্রেতা সংকট দেখিয়ে কমিয়ে দেয়া হচ্ছে সবজির দাম।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ব্যাপারি আনোয়ার হোসেন জানান, গত রবিবার তিনি পরিবহন খরচসহ ৩২ টাকা কেজি পটল কিনেছিলেন। কিন্তু ঢাকার কেরানীগঞ্জে নিয়ে বিক্রি করতে হয়েছে ২৫ টাকা কেজি। বড় পাইকাররা তাদের দাম দিচ্ছেন না।
স্থানীয় ব্যাপারি আবদুর রহমান বলেন, ‘আগে ঢাকায় যেতে ট্রাক ভাড়া লাগত ১৩-১৪ হাজার টাকা কিন্তু এখন ভাড়া নিচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। এতে পণ্যের দাম বেশি পড়লেও আমরা ঢাকায় নিয়ে দাম পাচ্ছি না।’
যশোর সদরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘সবজির উৎপাদন হয়েছে প্রচুর। কিন্তু ক্রেতা সংকটে দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। করোনার কারণে বাজারে ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে।’
যশোর আঞ্চলিক কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘যশোরে সারা বছর সবজির আবাদ হয়। গড়ে প্রতি বছর ৮ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি সবজি উৎপাদন হয়। প্রতি হেক্টরে গড়ে উৎপাদন হয় ২৩-২৫ মেট্রিক টন। সম্প্রতি কৃষি বিভাগ সবজি উৎপাদনে যশোরকে প্রথম ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখন করোনাভাইরাসের কারণে সবজির দাম কম পাচ্ছেন চাষিরা।’